নির্বাচনের ঘোষণায় বিএনপির স্বাগত, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিয়ে উদ্বেগ জামায়াত-এনসিপি-ইসলামী আন্দোলনের
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। তবে একই সঙ্গে সংশয় প্রকাশ করেছে জামায়াতে ইসলামি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দল তিনটি নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে আপত্তি না জানালেও ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ এবং ঘোষণার পদ্ধতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে।
বুধবার এক ভার্চ্যুয়াল বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, “জনগণের অধিকার বাস্তবায়নের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।” দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণাকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটাবে এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়ক হবে।
জামায়াত, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা উদ্বেগ জানিয়েছেন, সরকার এখনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অগোছালো অবস্থা এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। নির্বাচনের আগে ‘জুলাই সনদের’ আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন দলগুলো।
ইসলামী আন্দোলনের আমির চরমোনাই পীর মুফতি রেজাউল করীম বলেন, “এ অবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেওয়া কঠিন হবে।” তিনি গণভোট বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানান।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, “নির্বাচনকে স্বাগত জানাই, তবে তা হতে হবে সংস্কারের মাধ্যমে, নিরপেক্ষ পরিবেশে।” এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, নির্বাচনের আগে মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
দলগুলোর অভিযোগ, নির্বাচন সংক্রান্ত ঘোষণার আগে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। বিএনপির সঙ্গে সরকার বেশি যোগাযোগ রেখেছে বলে মন্তব্য করেন তারা। ইসলামী আন্দোলনকে তো শেষ মুহূর্তে জানানো হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এখন সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনমুখী। গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, “ঘোষণাপত্রে দীর্ঘ শাসনব্যবস্থার মূল্যায়ন অনুপস্থিত। এখন সবাই নির্বাচনের দিকে এগোবে, জুলাই সনদ হয়তো প্রান্তে পড়ে থাকবে।”