চলমান সংবাদ

জাতীয় ঐকমত্যে জোর করে একমত হতে বাধ্য করা হলে তা মানা সম্ভব নয় : সালাহউদ্দিন


সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সোমবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার বিংশতম বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাফ জানিয়ে দেন, সব প্রস্তাবে একমত হতে বাধ্য করলে ঐক্যের কোনো বাস্তব ভিত্তি থাকে না।

তিনি বলেন, “এখন যদি আমাদের বাধ্য করা হয় যে এসব বিষয়ে একমত হতেই হবে, সেটাতো মানা সম্ভব না। আলোচনার অর্থই হয় ভিন্নমত তুলে ধরা এবং সমঝোতার পথ খোঁজা। একমতের জন্য চাপ সৃষ্টি করলে ঐক্য প্রতিষ্ঠা দূরের কথা, আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবে।”

কমিশনের বৈঠকে এদিন সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে তীব্র মতানৈক্য দেখা দেয়। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিরপেক্ষ ও কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী নির্বাহী বিভাগ, যার ওপর জনগণের প্রত্যাশা পূরণের দায়িত্ব বর্তায়। শুধুমাত্র দায়িত্ব ও জবাবদিহি চাপিয়ে দিয়ে নির্বাহী বিভাগের হাত–পা বেঁধে দেওয়া হলে তা ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন।

কমিশনের পক্ষ থেকে একমতের জন্য চাপ প্রয়োগের অভিযোগ তোলেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সও। তিনি বলেন, “জোর করে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা যৌক্তিক নয়। এতে করে বৈঠক দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং প্রকৃতপক্ষে সমাধান আরও দূরে সরে যাচ্ছে।”

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন জানান, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি স্বাধীন সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হয়েছে, যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি থাকবে। এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও বিবেচনায় এসেছে—যার অধীনে ভবিষ্যতে সংসদ কোনো সংশোধনী আনলে তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে যেতে হবে। তিনি একে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

প্রসঙ্গত, এদিনের বৈঠকে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব সংক্রান্ত আলোচনার কথা থাকলেও সাংবিধানিক নিয়োগ বিষয়ে দ্বন্দ্বের কারণে তা অনুপস্থিত ছিল। জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান আলোচনায় মতপার্থক্য স্পষ্ট হলেও কিছু প্রস্তাবে আংশিক অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে জোরপূর্বক একমতের প্রয়াস রাজনৈতিক সমঝোতার পথে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেই মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।