চট্টগ্রামে ওএমএস ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ -সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে বিতর্কিত হচ্ছে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে নতুনভাবে ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) ডিলার নিয়োগে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি ওএমএস নীতিমালা উপেক্ষা করে যাচাই-বাছাই ও নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়াজুড়েই নিয়ম ভাঙা হয়েছে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিগত সরকারের আমলে ‘দলীয় বিবেচনায়’ নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলারদের বরখাস্ত করে নতুন করে ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে খাদ্য অধিদপ্তর। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে নতুন ডিলার নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে। এই প্রক্রিয়ায় মোট ৪২৮ জন আবেদন করেন।
এরপর চট্টগ্রাম জেলা ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাই শেষে নতুন ৪১ জন ডিলার নিয়োগ দেয়। কিন্তু এ নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে ইতোমধ্যেই নানা প্রশ্ন ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, অনেক ক্ষেত্রে আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই কিংবা সরেজমিন তদন্ত ঠিকভাবে হয়নি। অনেক অযোগ্য ব্যক্তি বা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের ডিলারশিপ দেওয়া হয়েছে।
খাদ্য অধিদপ্তরের আঞ্চলিক ও জেলা কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, তাদের দপ্তরে ইতোমধ্যে একাধিক লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই চলছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর জানিয়েছে।
এ বিষয়ে এক স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বলেন, “আমাদের ওয়ার্ডে যিনি ডিলার হয়েছেন, তিনি তৃণমূলের কাউকে চেনেন না, এলাকার মানুষও তাঁকে চেনে না। এতে ওএমএস পণ্যের সঠিক বণ্টন নিয়ে আমরা শঙ্কিত।”
এদিকে, খাদ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আবেদনপ্রক্রিয়া থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ের তদন্তে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। তবে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, সাধারণ মানুষের জন্য সরকার চাল, আটা ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের সহনীয় মূল্যে বিক্রয়ের লক্ষ্যে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া এই কার্যক্রমের কার্যকারিতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনিয়মের মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হবেন এবং ন্যায্য দামে খাদ্যপণ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটবে। তাই অভিযোগগুলো নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।