সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেস উপলক্ষে রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে চট্টগ্রামে সভা অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ত্রয়োদশ কংগ্রেসকে সামনে রেখে খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাব এবং খসড়া ঘোষণা ও কর্মসূচি ব্যাখ্যা বিষয়ে চট্টগ্রামে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সিপিবি নেতারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) নগরীর হাজারী লেইনে পার্টির কার্যালয়ে সিপিবি, চট্টগ্রাম জেলা কমিটির উদ্যােগে দিনব্যাপী এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ত্রয়োদশ সম্মেলনকে সামনে রেখে আগে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রণীত খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাব ব্যাখ্যা করে উপস্থাপন করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন।
সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহার সভাপতিত্বে ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় রাজনৈতিক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উত্তম চৌধুরী ও মছিউদদৌলা এবং সদস্য ডা. আরিফ বাচ্চু, প্রদীপ ভট্টাচার্য, এডভোকেট জহির উদ্দিন মাহমুদ, অধ্যক্ষ আবুল মনসুর মোহাম্মদ হাবিব, এডভোকেট হারাধন দে, গৌরচাঁদ ঠাকুর এবং আবুল কাশেম।
সভায় বক্তারা বলেন, অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল রাষ্ট্রের কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কার, হত্যাকারীদের বিচার ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। কিন্তু গত ১১ মাসে আমরা দেখলাম, সরকার সংস্কারের নামে অহেতুক কালক্ষেপণ করছে। জোরপূর্বক নিজস্ব ও বহি:শক্তির স্বার্থের বিভিন্ন এজেন্ডা দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। বিচার প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগগ্রগতি তেমন নেই। অথচ চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে দেয়া, আরাকানকে করিডোর দেয়াসহ এখতিয়ার বর্হিভূত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আমরা সরকারকে ব্যস্ত দেখতে পাচ্ছি।
এর মধ্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। মব সন্ত্রাসে জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রাস্তাঘাটে পিটিয়ে নির্বিচারে মানুষ খুন করা হচ্ছে। বাজারে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে।
এ অবস্থায় নির্বাচন আদৌ হবে কী না, সেটা নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। জনগণ হতাশ হতে শুরু করেছে। ম্বৈরাচার আওয়ামী লীগের আমলে ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণ যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে না পারে, সরকার যদি নির্বাচন নিয়ে কৌশলের খেলা অব্যাহত রাখে, তাহলে দেশ আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে, যা কাম্য নয়। আমরা আশা করি, সরকার দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় নেবে।