চলমান সংবাদ

জীবিত ব্যক্তিকে ‘মৃত’ দেখিয়ে হত্যা মামলা – আইনের অপব্যবহারে চরম উদ্বেগ

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বাসিন্দা সোলায়মান সেলিম সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার শিকার হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার বাদী তার আপন বড় ভাই। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৩ আগস্ট ঢাকার কাজলা এলাকায় সেলিম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। অথচ বাস্তবে তিনি জীবিত এবং স্বাভাবিকভাবে ময়মনসিংহে বসবাস করছেন।

এ ঘটনার পর পুলিশ তার ঠিকানায় তদন্ত করতে গিয়ে সেলিমকে জীবিত অবস্থায় পেয়ে অবাক হন। এই ঘটনা জানার পর সেলিম নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

অবাক করার মতো বিষয় হলো, এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ যেমন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান কামাল, শামীম ওসমানসহ মোট ৪১ জন নেতা এবং আরও দেড়শ থেকে দুইশ জন অজ্ঞাতনামা নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

যাত্রাবাড়ী ও ফুলবাড়ীয়া থানা যৌথভাবে প্রাথমিক তদন্ত শেষে বিষয়টি বর্তমানে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অধীনে তদন্তাধীন রয়েছে।

এ ধরনের ঘটনা শুধু ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য হুমিকর নয়, এর গভীর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। একজন জীবিত ব্যক্তিকে মিথ্যা মৃত্যু দেখিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করা হলে দেশের বিচার ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি জনসাধারণের আস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়। পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির উদ্দেশ্যে এ ধরনের মামলা দায়ের করা হলে তা বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় ঘটে। এতে করে প্রকৃত অপরাধ তদন্তে বাধা সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আইনের অপব্যবহার রোধে যথাযথ তদন্ত, প্রযুক্তিগত যাচাই-বাছাই এবং বিচার বিভাগের নিরপেক্ষ অবস্থান অপরিহার্য। ভুয়া মামলা দায়েরকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করা কঠিন হয়ে পড়বে।