চলমান সংবাদ

জাহাজভাঙা শ্রমিকদের ২৫ রমজানের মধ্যে বেতন-বোনাস প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করছেন জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন দত্ত

আজ সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের এক মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ফোরামের আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য শ্রমিকনেতা তপন দত্তের সভাপতিত্বে এবং ফোরামের সদস্য সচিব ফজলুল কবির মিন্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি  এ এম নাজিম উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দিন, জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির আহ্বায়ক এডভোকেট জহির উদ্দিন মাহমুদ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলার  সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ মেটাল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ আলী, জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের কোষাধ্যক্ষ রিজওয়ানুর রহমান খান, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতা মোঃ মানিক মণ্ডল, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের শহিদুল ইসলাম,  বিএফটিইউসি’র মোঃ হাসান  প্রমুখ।

সমাবেশ থেকে  বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালার বিধি ১১১(৫) অনুসারে জাহাজভাঙা শ্রমিকদের আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মূল বেতনের সমপরিমান উৎসব বোনাস এবং মার্চ মাসের পূর্ন বেতন ২৫ রমাজনের মধ্যে প্রদান করার জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয় এবং এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, জাহাজভাঙা শ্রমিকেরা যে মজুরি পায় তা দিয়ে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করাই কষ্টকর হয়ে পড়ে। সুতরাং রমজান মাস এবং ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তাদের যে বাড়তি খরচ প্রয়োজন হয় তা মিটানোর জন্য প্রত্যেক শ্রমিককে ঈদবোনাস প্রদান জরুরি। তারা আরো বলেন ঈদ বোনাস মালিকের দান বা ভিক্ষা নয় বরং এটা শ্রম আইন ও বিধি দ্বারা সুরক্ষিত প্রত্যেক শ্রমিকের ন্যায় সঙ্গত অধিকার। শ্রমিকদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে তা শিল্পের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে না।

সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, মালিকপক্ষ জাহাজভাঙা সেক্টরে ২০১৮ সালে ঘোষিত নিম্নতম মজুরি এখনো  বাস্তবায়ন করেনি। অথচ গত বছর মালিক সমিতি থেকে নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়নের  ব্যাপারে সুস্পষ্ট ওয়াদা ছিল। ইতিমধ্যে ২০২৫ সালের মার্চ মাস পার হওয়ার পরেও নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়িত না হওয়া দুঃখজনক।

বক্তারা বলেন, মালিকপক্ষের এধরনের বেআইনি কার্যক্রম মেনে নিয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে  জীবনের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা সত্বেও এই সেক্টরে কর্মরত শ্রমিকেরা ন্যায্য মজুরি পাওয়া থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে এবং তারা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।

শ্রমিকনেতারা, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষের দাম বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,  বর্তমান ব্যাজারে জিনিষপত্রের দামের উর্ধ্বগতির কারনে স্বল্প আয়ের মানুষ আজ দিশেহারা। এই অবস্থায় হতদরিদ্র শ্রমিকদের স্বস্থি দেয়ার লক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ এবং স্থায়ী সমাধানকল্পে দেশের সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও জাহাজভাঙা শ্রমিকসহ সকল খাতের শ্রমিকদের জন্য ন্যায্যমূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা এবং সীতাকুণ্ড শিল্পাঞ্চলসহ সারাদেশের শ্রমঘন এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করার দাবি জানানো হয়।