চলমান সংবাদ

ফারিয়া’র সাথে টিইউসি নেতৃবৃন্দের মত বিনিময় সভা

-ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভরা যেন আধুনিক দাস শ্রমিক

ফারিয়া’র সাথে টিইউসি নেতৃবৃন্দের মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছে টিইউসি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি তপন দত্ত।

অদ্য সকাল ১০টায় বাংলাদেশে ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভ এ্যাসোসিয়েশন (ফারিয়া) এর চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতৃবৃন্দের সাথে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন  বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি তপন দত্ত এবং সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক ফজলুল কবির মিন্টু। এতে টিইউসি’র পক্ষে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইফতেখার কামাল খান, বেসরকারী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজান এবং বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভ এ্যাসোসিয়েশন (ফারিয়া) এর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, ফারিয়া’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি মিলন কান্তি দে, চট্টগ্রাম মহানগর ও উত্তর জেলার সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন তারেক, মহানগর সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শরীফ হোসেন, কক্সবাজার জেলার সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আনসার উদ্দিন প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় ফারিয়ার নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভরা এক মানবেতর জীবন যাপন করছে। শ্রম আইন অনুযায়ী তারা সাপ্তাহিক ছুটি, উৎসব ছুটি, নৈমিত্তিক ছুটি, পীড়া ছুটি এবং অর্জিত ছুটি কোন কিছুই পায় না। সম্প্রতি রিপ্রেজেন্টেটিভদের পক্ষ থেকে সাপ্তাহিক ছুটির ব্যপারে জোরালো দাবি জানানো হলে বর্তমানে মাসে ২টি সাপ্তাহিক ছুটি ভোগ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। অবশ্য টার্গেট পূর্ণ করার তাগিদে অনেকের পক্ষে উক্ত দুই দিনও পরিপূর্ণভাবে ভোগ করা সম্ভব হয় না। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুসারে দৈনিক সর্বোচ্চ ৮ ঘন্টা কাজ করানোর বাধ্যবাদকতা থাকলেও রিপ্রেজেন্টেটিভরা প্রতিনিয়ত ১২/১৪ ঘণ্টা কাজ করে এবং ৮ ঘন্টার অতিরিক্ত কাজের জন্য তারা কোন ওভারটাইমভাতা পায় না। তারা বলেন, আমাদের বাহিরের পোশাক দেখে বুঝার উপায় নেই আমরা কী পরিমান মানবেতর জীবনযাপন

করছি।  তারা আরো বলে, সবচেয়ে বেশি শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, ইদানীং বেশীরভাগ ফার্মাসিটিক্যালস কোম্পানী নতুন রিপ্রেজেন্টেটিভ নিয়োগ দেয়ার সময় প্রত্যেকের কাছ থেকে ব্ল্যাঙ্ক চেক নিয়ে রাখে। অনেক সময় ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাখা হয়। ফলে কোন রিপ্রেজেন্টিটেটিভ চাইলেই তার ইচ্ছা অনুযায়ী চাকরি ছাড়তে পারে না অর্থাৎ মালিকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন রিপ্রেজেন্টেটিভ চাকরি ছাড়লে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দেয়া হবে হুমকি দেয়া হয়। ফলে তারা আধুনিক যুগে বাস করেও যেন দাস এবং বাধ্য শ্রমিকের ন্যায় জীবন যাপন করছে।

মতবিনিময় সভা শেষে সভাপতির বক্তৃতায় তপন দত্ত বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। একটি বৈষম্যমুক্ত ও শোষন-বঞ্চনাহীন সমাজ এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। সর্বশেষ বিগত ৫ আগস্ট সহস্রাধিক ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন এই বাংলাদেশে ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভদের উপর যে জুলুম নির্যাতন হচ্ছে বলে আজ জানতে পেরেছি তা কখনোই মেনে নেয়া যায় না। তিনি এ ধরণের বেআইনি ও অমানবিক আচরণ না করার জন্য ফার্মাসিউটিক্যালস মালিকদের প্রতি আহ্বাণ জানান অন্যথায় চটগ্রামসহ সারা দেশের শ্রমিকদের সাথে নিয়ে এই ধরণের আমানবিক, অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুসিয়ারী উচ্চারন করেন।