চলমান সংবাদ

ভাণ্ডালজুড়ি প্রকল্পের পানি সরবরাহ নভেম্বর-ডিসেম্বরে

কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী উপজেলার মধ্যবর্তী জ্যৈষ্ঠপুরার ভান্ডালজুড়ি পাহাড়ি এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীরে ও দুই পাহাড়ের পাদদেশে ৪১ দশমিক ২৬ একর জায়গায় গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম ওয়াসার দৃষ্টিনন্দন ভান্ডালজুড়ি পানি শোধনাগার প্রকল্প। এই প্রকল্প থেকে পানি সরবরাহ শুরু হবে আগামী নভেম্বর–ডিসেম্বরে। প্রথমে সংযোগ দেওয়া হবে কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ের কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইপিজেড, সিইউএফএল, কাফকো ও পটিয়া ইন্দ্রপোলের লবণ কারখানাসহ অন্যান্য শিল্পাঞ্চলগুলোতে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে জানা গেছে, একটি শিল্প জোনে তারা একটি কানেকশন দেবে। এই কানেকশন থেকে কারখানার কর্তৃপক্ষ তাদের ইচ্ছেমতো পুরো কারখানায় সংযোগ দিতে পারবে। ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে বড়–ছোট মোট ১৩টি বাণিজ্যিক সংযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম।

এক দফা সময় বৃদ্ধির পর চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। প্রকল্পের কাজ শেষ হতে আরো ৬ মাস লাগবে বলে জানা গেছে। এই প্রকল্প থেকে দৈনিক ৬ কোটি লিটার পানি সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। পটিয়া–আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর শিল্পাঞ্চলে পানি সংকট দূর করার টার্গেট নিয়ে এই প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ১০ লাখ মানুষকে সুপেয় পানির আওতায় আনার চিন্তা রয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পানি সরবরাহের জন্য পটিয়া বাইপাস এলাকায় ৫ একর জায়গায় এবং আনোয়ারার দৌলতপুর মৌজায় ২ দশমিক ৯৪ একর জায়গায় দুটি জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, বোয়ালখালীর ভান্ডালজুড়ি থেকে পানির পাইপলাইন বোয়ালখালী মিলিটারি পুলের কাছে এসে দুই ভাগ হয়েছে। একটি অংশ চলে গেছে আহলা দরবার শরীফ হয়ে পটিয়া পৌরসভায়। অপর অংশটি শিকলবাহা ও মইজ্জ্যারটেক হয়ে কর্ণফুলী ও আনোয়ারায় চলে গেছে। কর্ণফুলী ও আনোয়ারা অংশ যাওয়া পাইপলাইনটি কালারপুল ব্রিজের কাছে এসে ক্রস কালভার্টের কাজ করার জন্য আটকে আছে। বাকি সব পাইপলাইনের কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল প্রকল্পটি। তখন প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে প্রকল্পের শুরুতে ভূমি জটিলতায় পড়তে হয় ওয়াসাকে। এজন্য তিন বছর আটকা পড়ে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয় কাজ। ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি প্রথম সংশোধিত আকারে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি করে ১৯৯৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা করা হয়। প্রকল্পের ৮২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক। বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ১১৫০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা নিজস্ব তহবিল থেকে দিচ্ছে ২০ কোটি টাকা। এক দফা সময় বৃদ্ধির পরও নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না।

# ০৬/০৯/২০২৩, চট্টগ্রাম