চলমান সংবাদ

গ্রীন শিপ ইয়ার্ডসহ সকল শিপ ইয়ার্ডে

শ্রমিক অধিকার বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

আজ বিকাল ৪টায় জামালখান চেরাগী পাহাড় মোড়ে জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের উদ্যোগে এক মানব বন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফোরামের সদস্য শ ম জামালের সভাপতিত্বে এবং বিলস-ডিটিডিএ প্রকল্পের জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য কেন্দ্রর কো-অর্ডিনেটর ফজলুল কবির মিন্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত মানববন্ধন সমাবেশে প্রধান অথিতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফোরামের যুগ্ম আহবায়ক জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন এবং অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফোরামের কোষাধ্যক্ষ রিজওয়ানুর রহমান খান, বিলস এর কর্মকর্তা পাহাড়ি ভট্টাচার্য, ফোরামের সদস্য রবিউল হক শিমুল, বিএফটিইউসি চট্টগ্রাম জেলার সাধারন সম্পাদক কে এম শহিদুল্লাহ, টিইউসি’র জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিকনেতা মানিক মন্ডল, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিকনেতা মো: ইদ্রিস, ফ্রী ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিকনেতা মো: ইলিয়াছ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিএলএফ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক নুরুল আবছার তৌহিদ এবং আবু আহমেদ মিয়া, সাইলো ঠিকাদার শ্রমিক ইউইয়নের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।
সভায় বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প দেশের অদক্ষ জনশক্তির কর্মসংস্থান এবং অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলছে। আবার পরিবেশ বিপর্যয় এবং ইয়ার্ডে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার কারণে শ্রমিকের নিহত-আহতের হার বেশি হওয়ায় এই শিল্পের একটি নেতিবাচক পরিচিতি থাকলেও বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার এ্যাডভোকেসি, ক্যাম্পেইন ও সংলাপসহ নানামুখী কার্যক্রমের ফলে বর্তমানে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তিনটা ইয়ার্ড গ্রীন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আরো কিছু ইয়ার্ড গ্রীন শিপ ইয়ার্ডের সনদ পাওয়ার ব্যাপারে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাকী ইয়ার্ড গুলোও গ্রীন শিপ ইয়ার্ডে রুপান্তরের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এটাকে আমরা ইতিবাচক পরিবর্তন হিসাবে দেখতে চাই। তবে একইসাথে বলতে চাই -শুধুমাত্র গ্রীন শিপ ইয়ার্ড প্রতিষ্ঠাই একমাত্র বিষয় হতে পারেনা। কেননা আমরা লক্ষ্য করছি, গ্রীন শিপ ইয়ার্ড গুলোতেও শ্রমিকদের জীবনমান, আন্তর্জাতিক শ্রমমান এবং ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে খুব বেশি ইতিবাচক পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ ইয়ার্ডের অবকাঠামো উন্নয়ন বাদ দিলে শ্রমিক অধিকারের প্রশ্নে গ্রীন শিপ ইয়ার্ড এবং অন্য সাধারণ শিপ ইয়ার্ডের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, শ্রমিকের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন না হলে এবং শ্রমিকের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হলে শুধুমাত্র অবকাঠামো পরিবর্তন করে হয়তো শিল্পের চাকচিক্য বৃদ্ধি পায় কিন্তু শিল্প টেকসই হয় না। তাই জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পকে একটি পরিবেশবান্ধব, মানবিক ও টেকসই শিল্প হিসাবে গড়ে তোলার স্বার্থে সকল শিপ ইয়ার্ডে শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান, ঠিকাদারের অধীনে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনে শ্রমিকদের রাতে কাজ না করানো, শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এবং আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুসরণ করে শ্রমিকদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন ও দর কষাকষির অধিকার দিতে হবে।