শরণার্থীদের নিজ দেশে যাওয়ার আইন বাতিল করতে চায় ডেনমার্ক

ডেনমার্কের বর্তমান ক্ষমতাসীন সোশ্যাল ডেমোক্রেট সরকার শরণার্থীদের তাদের নিজ দেশে ছুটিতে যাওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করে নতুন একটি বিল পাস করতে চায়। বর্তমান আইনে, ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে অবস্থানরত শরণার্থীরা চাইলে তাদের নিজ দেশে ঘুরতে যেতে পারেন।
ডেনমার্কে দীর্ঘমেয়াদে বসবাসরত শরণার্থী ও উদ্বাস্তুরা নিজ দেশে ছুটিতে যাওয়ার অধিকার হারাচ্ছে। ইউরোপের ভিসানীতি ও ভ্রমণ নিয়ে কাজ করা বিশেষ সংবাদমাধ্যম শেঙেন ভিসা ইনফো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ডেনিস অভিবাসন মন্ত্রী কারে ডিবভাদ বলেছেন, “একজন ব্যক্তি নিজ দেশে নির্যাতিত, আবার একই সময়ে গ্রীষ্মের ছুটিতে নিজ দেশ ঘুরতে যান। এমন হলে ডেনমার্কে অ্যাসাইলাম রেসিডেন্স পারমিট নিয়ে বসবাস করা ঠিক নয়।”
এখন অবধি, যেসব শরণার্থীরা ডেনমার্কে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আছেন তারা চাইলে তাদের মূল দেশে ছুটিতে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু মন্ত্রী কারে ডিবভাদ এই সম্ভাবনা বাতিল করতে চান।
তিনি বলেন, ‘“আমার মতে ১০ বছরের নিয়মের কোনো মানে হয় না। তাই আমরা এই আইন পরিবর্তন করতে চাই।”
তিনি আরও আশ্বস্ত করেছেন, “এই নতুন ব্যবস্থাটি ডেনমার্কে উপস্থিত প্রায় ৬০ হাজার শরণার্থীর মধ্যে পরিলক্ষিত কোনও ঘটনার উপর ভিত্তি করে নেয়া হচ্ছে না। এটি একটি নীতিগত বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।”
শরণার্থীরা তাদের মূল দেশে ছুটিতে গেলে, ড্যানিশ অভিবাসন পরিষেবা তার রেসিডেন্স পারমিট বাতিল করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
শরণার্থীদের জন্য অভ্যর্থনা শর্তের এই কঠোরতা ডেনমার্কের দীর্ঘস্থায়ী কট্টর অভিবাসন নীতির অংশ। প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন দেশটিতে আসা নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে চায়।
২০২১ সাল থেকে শরণার্থীদের সামাজিক সুবিধা পেতে সপ্তাহে কমপক্ষে ৩৭ ঘন্টা কাজ করতে হচ্ছে।
চলতি বছরের জুনে ইউরোপীয় কমিশনের সমালোচনা সত্ত্বেও, ডেনমার্ক তৃতীয় দেশে আশ্রয়ের আবেদন আউটসোর্সিং করার সম্ভাবনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
যুক্তরাজ্যের মতো ডেনমার্কও আশ্রয়প্রার্থীদের স্থানান্তর নিয়ে রুয়ান্ডার সঙ্গে আলোচনা করেছে।
গত বসন্তে, ড্যানিশ সরকার সিরিয়ার শরণার্থীদের তাদের দেশে ফিরে যেতে বলেছিল, যদিও সেখানে এখনও যুদ্ধ চলছে।
ডেনমার্কের অভিবাস নীতি ও বিতর্ক যেন সমার্থক। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সাবেক অভিবাসন মন্ত্রীকে বিবাহিত শরণার্থী দম্পতিদের আলাদা করার দায়ে শাস্তি দিয়েছিল দেশটির আদালত।
এছাড়া, ২০১৮ সালে বিতর্কিত ঘেটো আইন গ্রহণ করেছিল দেশটির সরকার। এটির লক্ষ্য, দেশটির যেসব এলাকায় এক হাজারেরও বেশি অভিবাসী বাস করেন সেসব এলাকায় কর্মসংস্থান, শিক্ষা, আয় এবং অপরাধের ওপর ভিত্তি করে অ-ইউরোপীয় অভিবাসীদের সংখ্যা ৫০ শতাংশের মধ্যে এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা।
এমএইউ/টিএম (শেঙেন ভিসা ইনফো)