‘আমেরিকাকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ আওয়ামী লীগ সরকারই দিয়েছে’- কমরেড শাহ আলম

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সভা শুক্রবার (৭ জুলাই ) বিকেলে ৫ টায় নগরীর হাজারীগলিস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিপিবি জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড অশোক সাহার সভাপতিত্বে ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কমরেড নুরুচ্ছফা ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড মৃণাল চৌধুরী, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য কমরেড উত্তম চৌধুরী, মছি উদ-দৌলা। সভায় রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক আলোচনা করেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম।
এসময় কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে মানুষ ভীতির মধ্যে বসবাস করছে। সবচেয়ে বেশী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে সাংবাদিকরা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিলো। সেই আওয়ামী লীগ সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন বন্ধ করে দিলো। আজ রাতের আঁধারে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় টিকে আছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হয়েছে। দেশের রাজনীতি আজ মানুষের হাতে নেই। আওয়ামীলীগ বা বিএনপির হাতেও নেই। রাজনীতি এখন বিদেশী, সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে। সরকারের কিছু কর্মকান্ডে আমেরিকা স্যাংশন দিয়েছে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাঁধা দেবে তাদেরকে নাকি আমেরিকা ভিসা দেবে না। তাদেরকে এই হস্তক্ষেপ করার সুযোগ তো মূলত আওয়ামী লীগ সরকারই করে দিয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রশ্নে আওয়ামী লীগ বা বিএনপির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
সিপিবি সভাপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর অতিক্রম করেছে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী জনগণ যে ধরনের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, দেশ আজ তার উল্টোপথ ধরে চলছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ধারা ও রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে ক্ষমতাসীন সরকার গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বায়নের অধীনস্থ পুঁজিবাদের বাজারি ধারায় রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। জনগণের দৈনন্দিন জীবন-সংকট তীব্রতর হচ্ছে। দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি বেড়েছে এবং নতুন করে ২.৫ কোটি মানুষ বেকার হয়েছে। এদিকে কোটিপতিদের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৫%। ধনী আরো ধনী হচ্ছে গরিব আরো গরিব হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই অবস্থায় শুধু খেটে-খাওয়া মানুষই নয়, দেশের মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনের সংকট আরো তীব্র হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রয়োজন একটি গণজাগরণের মাধ্যমে কৃষক-শ্রমিক-ক্ষেতমজুর, গরিব মধ্যবিত্তদের ঐক্য গড়ে তুলে সিপিবি’কে শক্তিশালী করে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে অসাম্য দূর করা।