দাঁড়াও, নিজেকে প্রশ্ন করো- কোন পক্ষে যাবে?

এতদিন কিছু একা থেকে শুধু খেলেছি একাই,
পরাজিত প্রেম তনুর তিমিরে হেনেছে আঘাত
পারিজাতহীন কঠিন পাথরে
প্রাপ্য পাইনি করাল দুপুরে
নির্মম ক্লেদে মাথা রেখে রাত কেটেছে প্রহর বেলা
এই খেলা আর কতোকাল আর কতটা জীবন!
কিছুটাতো চাই হোক ভুল হোক মিথ্যে প্রবোধ
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই। (অভিমানের খেয়া)
রুদ্র বলতে চেয়েছে সেই সব কথা, যা গাছ পাখি তরু লতা পথ ঘাট তথা ছাপ্পান্ন হাজার বাংলা বলতে চেয়েছে রক্তচক্ষুর যাতাকলের অতল থেকে। রুদ্র বলতে চেয়েছে মানুষের যাপিত জীবনের প্রয়োজনের কথা, যে স্বপ্নের মোহর দেখিয়ে লুট করা হয়েছে স্বপ্নবান মানুষের সরল স্বপ্ন সেই সহজ স্বপ্নের কথা। অবল সরল মানুষের করোটি সস্তায় বর্গা নিয়ে চিটা ধান ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিবাদি কথা।
আরো কিছুদিন আরো কিছুদিন আর কতদিন
ভাষাহীন তরু বিশ্বাসী ছায়া কতটা বিলাবে
কতো আর এই রক্ত তিলকে তপ্ত প্রণাম!
জীবনের কাছে জন্ম কি তবে প্রতারণাময়?
এতো ক্ষয় এতো ভুল জমে ওঠে বুকের বুননে
এই আঁখি জানে পাখিরাও জানে কতোটা ক্ষরণ
কতটা দ্বিধায় সন্ত্রাসে ফুল ফোটে না শাখায়
তুমি তো জানো না আমি তো জানি. . .(অভিমানের খেয়া)
যুদ্ধপূর্বে-জন্ম রুদ্রের চোখ দেখেছে ভাষা, মাটি, দেশের জন্য মানুষের আকাঙ্খা। সে তীক্ষ্ণ চোখ বুঝেছে মানুষের স্বাধীনতার চাওয়া, মরিয়া মনের রক্তের স্রোত। কানে কানে শুনেছে নিপীড়িত একটি জাতীর বেদনার স্বপ্ন, কান্নার স্বর। অনুধাবন করেছে বুকের বেদনা আর হাজার বছরের মুক্তির স্বাদ। তার ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠা রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লার চেতনা যুদ্ধ দেখেছে, স্বাধীনতা দেখেছে, নতুন মানচিত্র দেখেছে, সবুজ ফসলের মাঠে টইটই করে বেড়িয়ে বড় হয়েছে আর তীরফলা জ্ঞানে জেনেছে ধুলিকণার আপাদমস্তক সব। কিন্তু মিল করতে পারেনি স্বপ্ন ও বাস্তবতার। স্বপ্নের সূচির সাথে বাস্তবতা মেলাতে যেয়ে পরাবাস্তবতার কবি রুদ্র পেয়েছে কেবল নূড়ি আর নূড়ি। প্রশ্ন আর প্রশ্নে নিজেই নিজেকে ফালি ফালি করে দেখেছে কোথাও কোনো উত্তর নেই। দশদিন ছেনি দিয়ে চেঁছেও রুদ্র পায়নি একটি সদুত্তর। কোথায় স্বপ্নের খামার, কোথায় সোনার ধান, কোথায় ইক্ষুর মতো লকলক করে বেড়ে উঠা মানুষ? শেয়াল আর শকুনের কাড়াকাড়িতে চুরচুর করে ঝড়ে পড়া মানচিত্রের করুণ কাহিনী রুদ্রকে দিয়েছে অনবরত পীড়া। পীড়নে পীড়নে রুদ্র জ্বলেছে নিজের ভিতরে নিজে। লোভাতুর, লোলুপ, স্বার্থন্বেসী, অপয়া হায়নাদের প্রতি আক্ষেপে রুদ্র পুড়েছে এমন।
তুমি তো জানো নাই আমি তো জানি
মাটি খুঁড়ে কারা শস্য তুলেছে
মাংসের ঘরে আগুন পুষেছে,
যারা কোনদিন আকাশ চায়নি নীলিমা চেয়েছে শুধু
করতলে তারা ধরে আছে আজ বিশ্বাসী হাতিয়ার
পরাজয় এসে কন্ঠ ছুঁয়েছে লেলিহান শিখা
চিতার চাবুক মর্মে হেনেছে মোহন ঘাতক
তবু তো পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে মুখর হৃদয়
পুষ্পের প্রতি প্রসারিত এই তীব্র শোভন বাহু. . .(অভিমানের খেয়া)
একাত্তর-পঁচাত্তর পেরিয়ে আশির দশকে পূর্ণযৌবনা কবি রুদ্র মুহাম্মদ কিছুতেই সামঞ্জস্য পায়নি যেন আর। যে নদীর তীর ঘেঁষে কলকল কলোস্বর তুলে পাল-উড়িয়ে যাবার কথা ডিঙ্গি নাও সেখানে ভিড়েছে অ্যালকোহলের জাহাজ। ধানের বদলে চাষ হয়েছে আফিমের। সোনার বদলে ফলেছে তামা আর তামা। সবুজ প্রান্তরের মিছিলে সামিল হওয়ার বদলে অগ্রজরা গোপনে মিলেছে বাণিজ্য নগরে, কারখানার ঘরঘর শব্দের সুরে। যে যেমন ছিঁড়ে ছিঁড়ে নিয়েছে ত্রিশ-লক্ষ কারিগরের বানানো সোনার ভাষ্কর্য। ফিরে এসেছে পুরোনো শকুনেরা। পানার মতো জলে ভেসে উঠেছে মানুষের লাশ। ফুলের বাগানে ক্ষুধার আহাজারি। বেহুলার ঘরে বেশ্যার উদম শরীর। রাজনীতির নগ্ননৃত্য। এসবই রুদ্রকে দিয়েছে দ্বিধান্বিত প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে। আয়নায় নিজের মুখ আর স্বপ্নের মুখ যেন আধা আধা গড়মিল। এসব কিছুই তাকে স্বস্তি দেয়নি। বারে বারে রুদ্র চিৎকার করে উঠেছে কবিতায়। স্লোগানে, মিছিলে রুদ্র বলেছে তার কবিতায় কাবিতায় হাজার অবলোকন।
আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই,
আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার করুণ চিৎকার শুনি
আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে-
এ-দেশ কি ভুলে গেছে সেই দু:স্বপ্নের রাত,
সেই রক্তাক্ত সময়? (বাতাতে লাশের গন্ধ)
এ-যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আড়ষ্ট জননী,
স্বাধীনতা- একি তবে নষ্ট জন্ম?
এ-কি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল?
জাতির পতাকা আজ খাঁমচে ধরেছে
সেই পুরোনো শকুন, বাতাসে লাশের গন্ধ-
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর
দেহে দোলে মাংসের তুফান।
মাটিতে রক্তের দাগ
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড়।
এ-চোখে ঘুম আসে না।
সারারাত আমার ঘুম আসে না। (বাতাসে লাশের গন্ধ)
স্খলিত মানুষের মুখ দেখে রুদ্র বারে বারে কাঁদত নীরবে-নিভৃতে। তার শিরা উপশিরা চিনচিন করে উঠত, চিন্তা আর মনোজগৎ বেওয়ারিশ হয়ে ঘুরে বেড়াত সুপেয় সরোবরের সন্ধানের আশায়। গণআন্দোলন, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা রুদ্রের রক্তের সাথে বন্ধু পেতেছিল নিবিড় আলিঙ্গনে। স্বৈরাচার লিপ্স মুখোশ, স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষের হাত, পা, চোখ, কান, নাক দেখে ভয়ে প্রকম্বিত হতো রুদ্রের সর্বশরীর। প্রেমে মিলন বহির্ভূত খণ্ড খণ্ড রাজনৈতিক ছায়াছবি রুদ্র গ্রহণ করেনি কখনো। স্বাধীনতার মখমলে প্রেতাত্ত্বাদের বিচরণ, উলঙ্গ দলবাজি, দখলবাজি ক্ষমতাবাজি, পিশাচের আনাগোনা বড় ভাবনায় ফেলতো রুদ্রকে। তার স্বপ্নের খামারে বাজিকড়দের ঘুরাঘুরি, জুয়ারীদের বত্রিশকার্ড ভালো লাগতো না তার। দেশ মাটি মানুষ মিশে থাকতো তার করোটির ভিতর। মানুষের জন্য, ভালোবাসার মাটির জন্য সদা-উদ্বিগ্ন রুদ্র তার সতর্কবানী যেন লিখে উড়িয়ে দিয়েছে কবিতার ভিতর দিয়ে।
ছেনাল সময় উরুত দেখায়ে নাচে
নপুংশকেরা খুশিতে আত্মহারা
বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে
রাজনীতিকের ধমনী শিরায় সুবিধাবাদের পাপ
বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে
বুদ্ধিজীবির রক্তে স্নায়ুতে সচেতন অপরাধ
বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে
জাতির তরুণ রক্তে পুষেছে নির্বীর্যের সাপ। (হাড়েরও ঘরখানি)
নানান পুঁজে ভেসে যেতে যেতে মাটি যখন মিশে যেয়ে শূন্যতায়। আর যখন কিছুই থাকে না আশার। সব যখন বাতাসে তুলোর মতো উড়ে যায় মেঘের কালো রূপ নিয়ে তখন রুদ্র আর কিছুর কাছেই যেয়ে যেন বিশ্বাস পায় নি। একটি আলোকবর্তীকে তার কাছে বাতিঘর মনে হয়েছিল। সে বাতিঘরের কথাই রুদ্র স্মরণ করিয়ে দিয়েছে নানান অসময়ে। হাল হারানো নাবিক দিশা হারিয়ে এদিক ওদিন করে যখন কোন ক্রমেই দিশা পায়নি কূলের, তখন রুদ্র দিশাহীন জাতিকে দিশা মনে করিয়েছে সেই তর্জনী আঙুল আর কণ্ঠের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে।
মনে পড়ে বট? রাজপথ পিচ? মনে পড়ে ইতিহাস?
সেন সাগরের উতলানো জল নেমেছে পিচের পথে
মানুষের ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভাঙা জীবনের কূলে
মনে কি পড়ে না, মনে কি পড়ে না, মনে কি পড়ে না কারো?
কী বিশাল সেই তাজা তরুণের মুষ্টিবদ্ধ হাত
যেন ছিঁড়ে নেবে গ্লোব থেকে তার নিজস্ব ভূমিটুকু!
মনে কি পড়ে না ঘন বটমূল, রেসকোর্স উদ্যান
একটি কন্ঠে বেজে উঠেছিল জাতির কন্ঠস্বর?
শত বছরের কারাগার থেকে শত পরাধীন ভাষা
একটি প্রতীক কন্ঠে সেদিন বেজেছিল স্বাধীনতা। (হাড়েরও ঘরখানি)
আকাশটা বড় হবে। মুক্ত হবে। স্বাধীন হবে সে সময়ে না বুঝলেও বয়সে রুদ্র ধারণ করেছিল পুরোটাই। স্বাধীনতার জন্য রক্ত, মান, বিসর্জন সবই সামনে দিয়ে ঘটছে, দেখেছে, বুঝেছে, শুনেছে তার চেতনা। তাকে প্রখর করেছে যুদ্ধ, মানুষের মুক্তি ভাবনা। মুক্তির পথে রোধ, সে রোধে রসদ ঢালা পতঙ্গরা উড়ে এলে পূনর্বার রুদ্র শঙ্কিত হয়ে পড়ে। রক্তখেকোরা প্রাণের দামে জমিনের উপর নাচলে রুদ্র ক্ষেপে ওঠে, বুকে পাঁজর ভাঙ্গার ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠে। সোনার বাংলায় সেই শকুনদের বিচরণে তপ্তবৃষ্টি ঝড়লে রুদ্র দারুণ প্রতিবাদ করে তার লেখন ভাষায়।
বৃষ্টি হলে মাটি কাঁপে, লাশগুলো আবার দাঁড়াতে চায়।
হাত বাঁধা, চক্ষু বাঁধা, বেয়নেটে ছিন্নভিন্ন দেহ-
লাশগুলো আবার দাঁড়াতে চায়।
পরিচিত শেয়ালেরা সারারাত হল্লা কোরে ফেরে,
উপরে শকুন ডাকে, শকুনের এখনো সুদিন।
মাংশের ঢেকুর তুলে নেড়িকুত্তা বেঘোরে ঘুমায়-
মাটি কাঁপে, লাশগুলো আবার দাঁড়াতে চায়।
এদেশে গঞ্জে, গ্রামে, শকুনের এখনো সুদিন-
মাটি কাঁপে, বৃষ্টি হোক, লাশগুলো আবার দাঁড়াক। (লাশগুলো আবার দাঁড়াক)
মাটি, দেশ, মানুষ রুদ্রের কাছে দেবতার সমান ছিল। রুদ্র বিশ্বাস করতো মানুষের জন্যই মুক্তি, স্বাধীনতা, দেশ, কাল। সে মানুষের ক্ষয়, বিনাশ, মৃত্যু- রুদ্রকে প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ের মতো নাড়িয়ে তুলতো। স্বাধীনতা বিরোধী সাচিবিক ভদ্রলোকের মুখের আড়ালে মুখশ্রীর কুশ্রীতার আক্রোশে সত্য ন্যায় প্রতিশোধ পরায়ণ রাষ্ট্রনায়করা একনায়ক হয়ে উঠলে মানুষ বিনাশে মাতে পাল্লা দিয়ে। সত্য কথন তখন আর ঠাঁই পায় না সরবে। পায়রার মতো গুলি করে উড়িয়ে দেয়া হয় ক্ষমতায় টিকে থাকবার লালশায় না-হয় নিজেদের টিকিয়ে রাখবার বাসনায় না-হয় পুঁজকে পুঁজিতে রূপ দেয়ার এক অকল্যাণ তৃষ্ণায়। সে তৃষ্ণায় ভাইকে ভাইয়ের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিলে, পালিতকে লালিতের বিরুদ্ধে দাঁঁড় করিয়ে দিলে রুদ্র দেখে সে খেলায় আদতে মানুষই মরে। অস্ত্র উঁচিয়ে তাক করলে কে মরে! পিতা সন্তানের ছোঁড়া গুলিতে বিচ্ছিন্ন হয়, সন্তান পিতার ছোঁড়া গুলিতে বিচ্ছিন্ন হয়! কিন্তু হুকুম দাতারা কোনদিনও মুখোমুখি হয় না নিদারুণ পরিনতির। লাল নিশান উড়িয়ে রুদ্র সে সত্য প্রচার করেছে রাজপথে দাঁড়িয়ে। কোনো ভয় নয়, কোনো দ্বিধা নয়, কোনো উচ্চাশা নয়, কোনো বিদ্বেষ নয়। মানুষকে ভালোবেসে সশস্ত্র মানুষের কাছে প্রশ্ন করেছে চোখে চোখে রেখে।
দাঁড়াও, নিজেকে প্রশ্ন করো- কোনো পক্ষে যাবে?
রাইফেল তাক করে আছে মানুষের দিকে।
সঙ্গিন উঁচিয়ে আছো ধূর্ত নেকড়ের মতো।
পায়ে বুট, সুরক্ষিত হেলমেটে ঢেকে আছো মাথা।
সশস্ত্র তোমার হাত, সংগঠিত, কে তোমাকে ছোঁয়!
তোমার বুলেট মানুষের বুক লক্ষ্য করে ছুটে যাচ্ছে
তোমার বুলেট মানুষের মাথার খুলি উড়িয়ে নিচ্ছে
তোমার বুলেট মানুষের হৃদপিন্ড স্তব্ধ করে দিচ্ছে
তুমি গুলি ছুঁড়ছো, তুমি গুলি ছুঁড়ছো মানুষের দিকে
সে মানুষের মধ্যে কেউ একজন তোমার ভাই
যে মানুষের মধ্যে কেউ একজন তোমার পিতা
যে মানুষের মধ্যে কেউ একজন তোমার বোন
যে মানুষের মধ্যে কেউ একজন তোমার ছেলে
সেই মানুষের দিকে তোমরা টার্গেট প্র্যাকটিস করছো. . .
দাঁড়াও, নিজেকে প্রশ্ন করো- কোন পক্ষে যাবে?
এ বোধ শুধু সশস্ত্রবাহিনীর প্রতি, বা সশস্ত্রবোধহীন মানুষের প্রতি নয়। রুদ্রের এ বোধ মানুষের বোধ। এ প্রশ্ন মানুষের প্রতি। আপামর মানুষ। ধর্মের মানুষ, ব্যবসার মানুষ, ন্যায়ের মানুষ, অন্যায়ের মানুষ, সুস্থ মানুষ, অসুস্থ মানুষ- সব মানুষের প্রতি। এ যেন কবিতা নয়, যেন এক দর্শন। যেন এক চিন্তা। যুগান্তকারী। বলের সাথে অবলের, ন্যায়ের সাথে অন্যায়ের, বিত্তের সাথে দারিদ্রের যেন মুখোমুখি করমর্দন। যেন বুকে বুক মিলিয়ে দেয়া। চোখে চোখে চোখ রেখে যেন সরাসারি জানতে চাওয়া। . . .এ বিবেক, এ চেতনা, এ বোধ আমাদের জানান দেয় রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ কে এবং কী।
সারা রাত স্বপ্ন দেখি, সারাদনি স্বপ্ন দেখি
যে-রকম আকাশ পৃথিবী দ্যাখে, পৃথিবী আকাশ।
এবার অন্ধকারে, এবার আলোর ছায়ায়
একবার কুয়াশা-কাতর চোখে, একবার গোধূলীর ক্লান্ত রোদে
সারারাত স্বপ্ন দেখি-সারাদিন স্বপ্ন দেখি।
একখানি সুদূরের মুখ জ্বলে থাকে চেতনার নীলে,
কে যেন বাদক সেই স্বপ্নের ভেতর তোলে বিষাদের ধ্বনি
আঁকে সেই প্রিয়মুখে-সুদূরের মুখে বর্ণময় রঙিন বিষাদ।
ফিরে আয় বলে ডাকি-উদাসীন সে বাদক থামেনা তবুও. . .
হে আমার বিষন্ন সুন্দর
দুচোখে ভাঙ্গন নিয়ে কেন এই রুক্ষ দু:সময়ে এলে
কেন সমস্ত আরতি শেষে আজ এলে শূন্য দুখানি হাত!
কেন এলে, হে বিষন্ন সুন্দর, তুমি কেন এলে? ( হে আমার বিষণ্ণ সুন্দর)