রাজনৈতিক পর্যালোচনা -সৈনিকের হাতে কলম: লেখক নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান – অপু সারোয়ার
-সৈনিকের হাতে কলম: লেখক নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান – অপু সারোয়ার
বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও জাসদ
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনা অভ্যুত্থানের সাথে জাসদ ও বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার নাম উঠে আসে। জাসদ জাতীয় ভিত্তিক দল হওয়ার কারণে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থাকে জাসদের সহযোগী বা অঙ্গ সংগঠন হিসেবে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। ১৯৭৫ সালে জাসদের সহযোগী সংগঠন ছিল ছাত্রলীগ (বৈ :স ), কৃষক লীগ , শ্রমিক জোট। রাজনীতিতে সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের সংজ্ঞা নিয়ে কিতাবী বিতর্ক রয়েছে। তবে বাস্তবে সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠন একই অর্থে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই সংগঠন গুলির দাপ্তরিক – কাগজে কলমে নাম যাই হোক না কেন এই সংগঠন গুলি জাসদ নামেই পরিচিতি লাভ করেছিল। যেমন জাসদ – ছাত্রলীগ , শ্রমিক জোট বা কৃষক লীগ জাসদ হিসাবেই পরিচিত ছিল। শ্রমিক এলাকায় শ্রমিক লীগ/ শ্রমিক জোট সব সময় জাসদ হিসেবেই পরিচিত ছিল। জাসদ ও এর সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্ৰীয় নেতারা যুদ্ধ পূর্ব কালে ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিলেন। যুদ্ধত্তোর কালে জাসদ গঠনের পরে এই ছাত্র বুদ্ধিজীবীরা বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার বিষয়টি পুরোপুরি ভিন্ন। যুদ্ধপূর্ব কালে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রী পন্থী ছাত্রলীগের উপদলের সাথে সাধারণ সৈনিকদের সাথে যোগাযোগ গড়ে উঠার কোন নজির নেই। যুদ্ধ কালে বিএলএফ শুধু মাত্র ছাত্রলীগের সদস্য জন্য উন্মুক্ত রাখার কারণে গণআন্দোলনে অগ্রগামী অংশের সাথে শ্রমিক কৃষক ও সাধারণ সৈনিকের রাজনৈতিক সমঝোতা গড়ে উঠার সম্ভবনা ছিল না।
বিএলএফের প্রায় আশি ভাগ নেতা কর্মীরা সাধারণ কৃষক পরিবার থেকে উঠে এসেছিল। এই ছাত্র বুদ্ধিজীবীরাই ছিল তাদের পরিবার গুলি থেকে উঠে আসা প্রথম কলেজ – বিশ্ববিদ্যালয় গামী প্রজন্ম। এই ছাত্ররা পাকিস্তান আমলে নানা ধরণের শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। কিন্তু যুদ্ধ কালে এই ছাত্ররা তাঁদের সমগোত্রীয় শ্রমিক -কৃষক পরিবারের সন্তান , যাঁরা সুযোগের অভাবে কলেজ – বিশ্ববিদ্যালয়ের দুয়ারে পৌঁছতে পারে নাই তাঁদেরকে বিএলএফ অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে নীরবতা পালন করেছেন। বিএলএফের কর্মী পর্যায়ের সংখ্যাগরিষ্ট অংশ জাসদ গঠন করে ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর। জাসদ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্লোগান তোলে। জাসদের দলিল দস্তাবেজে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব কিভাবে সম্ভব এই সম্পর্কে তেমন কোন দিক নির্দেশনা ছিল না। দল গঠনের শুরুতে পথ চলতে চলতেই জাসদের লোকবল ও তত্ব সংগ্রহের কাজ চলতে থাকে।
এই প্রক্রিয়ায় মেজর জলিল , কর্নেল তাহের জাসদের সাথে যুক্ত হয়ে পরে। এই দুই জন মুক্তিযুদ্ধে গৌরবজ্জল ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে রাজনীতিতে ছাত্রলীগের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রীদের সাথে যুক্ত ছিলেন না। মেজর জলিল ও কর্নেল তাহের সেনা বাহিনী থেকে আসার কারণে এদের রাজনৈতিক চিন্তা সম্পর্কে নিচের স্তরের জাসদ কর্মীরা তেমন কিছু জানতো না। মেজর জলিল জাসদের প্রথম সভাপতি ছিলেন। মেজর জলিলকে জাসদের সভাপতি করার সাথে মেজর জলিল মিথ তৈরির কাজে জাসদের প্রোপাগান্ডা বেশ সক্রিয় ছিল। মিথ তৈরির স্রোতে গতি আনে সদ্য সমাজতন্ত্রী মেজর জলিলের বই ” কেন সমাজতন্ত্র ” । কর্নেল তাহের ১৯৭২-১৯৭৫ সালে সরকারী চাকুরীতে থাকার কারণে কৌশলগত কারণে দৈন্দন্দিন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিতেন না। কর্নেল তাহেরের যোগাযোগ ও কর্মকান্ড জাসদের উপর পর্যায়ের নেতাদের সাথে ছিল। কর্নেল তাহেরের রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন বই পুস্তকের সিংহভাগ গত তিন দশকে লেখা। ১৯৭৬-১৯৯০ সালের মধ্যে জাসদ কিছু পত্র পত্রিকা ও পুস্তিকায় তাহেরর কেন্দ্রিক বক্তব্য গ্রন্থিত হয়েছিল। এই পুস্তিকা গুলি যত না কর্নেল তাহেরের রাজনৈতিক দর্শন আলোচিত হয়েছে এর চেয়ে ঢের বেশি কর্নেল তাহের ও জাসদের প্রতি অন্যায়-অবিচারের চিত্র সামনে এসেছে। এই পুস্তিকা গুলির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট হচ্ছে জাসদ নেতৃবৃন্দ ও জাসদের রাজনীতির বিচার মূলক পর্যালোচনা থেকে কলম বন্ধ রাখা। সামরিক আদালতে কর্নেল তাহেরের বিচার ও ফাঁসির ঘটনা জাসদের কর্মীদের প্রতিবাদের অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ান।
পাকিস্তানী সেনা প্রশাসনে বৈষম্যের কারণে এক প্রকার স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদী রাজনৈতিক চেতনা বিকশিত হয়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালী সৈনিক ও অফিসারদের মধ্যে। মুক্তিযুদ্ধ এই প্রতিবাদী চেতনায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছিল। যুদ্ধত্তোর কালে সেনাবাহিনীতে নানান স্রোত ছিল। যুদ্ধ অংশ গ্রহণকারী সেনা ও পাকিস্তান ফেরত সেনাদের স্নায়ু যুদ্ধের কথা বিভিন্ন মহলের অজানা ছিল না। এর বাইরে সেনাবাহিনী ও নব গঠিত রক্ষীবাহিনীর মধ্যে স্নায়ু যুদ্ধ ছিল। ১৯৭২-১৯৭৫ সময় কালে আওয়ামী লীগের শাসন ছিল অরাজকতা পূর্ন। ১৯৭৪ সালে দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। এই সব কিছুর প্রভাব সেনা বাহিনীতেও পড়েছিল। এই সময় সেনাবাহিনীতে সাধারণ সিপাহীদের কয়েক জনের উদ্দ্যোগে Revolutionary Command Council & suicide Force গঠিত হয়েছিল নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান এর নেতৃত্বে ১৯৭৩ সালের ১ লা জানুয়ারী । (১) যা পরবর্তীতে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা হিসেবে পরিচিতি পায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ।
নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমানের ভাষ্যনুযায়ী এই সংগঠনের সাথে জাসদের মেজর জলিলের যোগাযোগ গড়ে উঠে। মেজর জলিল ও সিরাজুল আলম খানের সাথে রাজনৈতিক বৈঠকে জাসদ ও বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা এক সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয় । (২) নায়েব সুবেদার মাহবুবর ঢাকার লালবাগ থানার পাশে কোন এক পুরানো ভবনে বৈঠকের কথা উল্লেখ করলেও বৈঠকের কোন তারিখ বা আনুমানিক দিনক্ষণ উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমানের লেখা থেকে জানা যায় এই বৈঠক ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ জাসদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বাড়ী ঘেরাও কর্মসূচীর আগে হয়েছিল ছিল। (৩) ১৭ মার্চ ১৯৭৪ সালে মেজর জলিল গ্রেফতার হয়ে যান। এর পরে কর্নেল তাহেরের সাথে নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমানদের সাংগঠনিক যোগাযোগ গড়ে উঠে। ” ১৯৭৪ সালে ১৫ এপ্রিলে মেজর জলিল জেল থেকে কর্নেল তাহেরের মাধ্যমে আমাকে একখানা পত্র পাঠান, তাতে লেখা ছিল আমার পরে সামরিক বাহিনীর সংগঠনের কোন পরামর্শ ও যে কোন কাজ কর্নেল তাহেরের সাথে করার জন্য।” (৪) কর্নেল তাহেরের সাথে সাক্ষাতের সময় কর্নেল তাহের নিজেকে গণবাহিনীর প্রধান হিসেবে পরিচয় দেন ১৯৭৪ সালের ১৫ এপ্রিল । (৫) সৈনিক সংস্থার মত গণবাহিনী জাসদের সহযোগী সংগঠন ছিল। এই সংগঠন গুলি সালের জাসদ পরিত্যাগ বা বিলুপ্ত করছে ১৯৭৬/১৯৭৭ সালে। জাসদের কোন অংশই এই সংগঠন সম্পর্কে আলোচনায় আগ্রহী নয়। গণবাহিনী কবে গঠিত হয়েছিল সে সম্পর্কে কোন সঠিক তথ্য নেই। রাজনৈতিকভাবে বিদিত ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চের পরে গণ বাহিনী গঠিত হয়েছিল। কর্নেল তাহের ও নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমানের যোগাযোগের দিন ক্ষণ দেখে অনুমান করা যায় ১৭ মার্চ ১৯৭৪ থেকে ১৫ এপ্রিল ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে গণবাহিনী গঠিত হয়েছিল। সিরাজুল আলম খান আত্ম জীবনীতে গণবাহিনী গঠনের কথা বেমালুম চেপে গেছেন।
কর্নেল তাহের মামলায় নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান রাজসাক্ষী হয়েছিলেন। মামলায় জড়িত হিসেবে মামলার বিষয়ে বা অভিযুক্তের বিষয়ে অভিযুক্তদের একজন ঘটনার সম্পূর্ণ বিবরন প্রকাশ করবে, এই শর্তে তাকে বিচারক ক্ষমার প্রস্তাব দিতে পারেন। ফৌজদারী মামলাতে এই সুযোগপ্রাপ্ত অভিযুক্তকে রাজসাক্ষী বলা হয়। নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান ও অন্য অপর একজন রাজসাক্ষীর সাক্ষ্যিতেই কর্নেল তাহেরের ফাঁসি হয়েছিল। নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান অবশ্য রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য জাসদ নেতৃবৃন্দকে দায়ী করেছেন ” মেজর জিয়াউদ্দিন আহমদ , সিরাজুল আলম খান (দাদা) ও জাসদ এর কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে রাজসাক্ষী হলাম।” রাজসাক্ষী হওয়ার ব্যাপারে জাসদ নেতৃবৃন্দের সাথে মাহবুবর রহমানের কোথায় কিভাবে যোগাযোগ বা আলোচনা হয়েছিল সে সম্পর্কে তিনি আলোকপাত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে রাজসাক্ষী হবার পুরস্কার হিসেবে জেনারেল জিয়াউর রহমানের সরকার নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমানকে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রলায়ে চাকুরী দিয়ে বিদেশে পাঠায়। (৭) এইভাবেই বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার এক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে।
নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য রাজনৈতিক মহলে নেই । তথ্যের অপ্রতুলতাকে কাটিয়ে তুলতে তিনি নিজেই কলম ধরেছেন – ” সৈনিকের হাতে কলম” বই লিখে। বাংলাদেশে একজন নন কমিশন সৈনিকের বই লেখার নমুনা খুব বেশি নেই। নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান পাকিস্থানী সেনা বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পূর্বে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তৎকালীন সময়ে এই ভূখণ্ডের প্রাথমিক-মাধ্যমিক শিক্ষা ছিল অবহেলিত ও প্রধানতঃ বেসরকারী অনুদান নির্ভর। ১৯৬৫ সালের ভারত – পাকিস্তান যুদ্ধ মাহবুবর রহমানকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছে। (৮) পাকিস্তানী সেনাবাহিনীতে বাঙালীদের প্রতি বৈষম্য প্রকট ছিল। মাহবুবর রহমানের ভাষায় ” পাকিস্তান আর্মিতে যোগ দিয়ে দেখি সেখানেও ইনসাফ বলতে কিছু নেই। বাঙ্গালী ও অবাঙালী সেনাদের মধ্যে রয়েছে ভীষণ রেষারেষী। সাম্যের তুলনায় এখানে বৈষম্যই অনেক বেশি। এ সময় আমার মন – মানসিকতা আরেক বার বিদ্রোহ প্রবণ হয়ে উঠে। তৈরী হতে থাকি আরেকটি বিদ্রোহের জন্য। (৯) এই বিদ্রোহী মানসিকতা মাহবুবর রহমানকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের জাতিগত নিপীড়ণ বিরোধী লড়াইয়ে সামিল হতে শক্তি জুগিয়েছিল। নভেম্বর ১৯৭১ সালে মাহবুবর রহমান টাঙ্গাইলে কাদের বাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। (১০) বইটিতে খুব বেশি অতি কথন নেই। রয়েছে রাজসাক্ষী হওয়ার দায় জাসদ নেতৃবৃন্দের উপর চাপানের প্রচেষ্টা। কর্নেল তাহেরের মামলা ও জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামলে জাসদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিক অবস্থান বিচার মূলক পর্যালোচনার দাবী রাখে। তবে সৈনিকের হাতে কলম বইয়ের নিবিড় পাঠ থেকে বোঝার কোন উপায় নেই জাসদ ও বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার মধ্যে কি কারণে রাজনৈতিক ঐক্য হয়েছিল। ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ সালের সেনা অভ্যুত্থান বেহাত হওয়ার পর জাসদ পক্ষ এই অধ্যায়য়ের শুধু মাত্র নির্বাচিত অংশ নিয়ে আলোচনায় অভস্থ্য ও আগ্রহী। সাধারণভাবে স্বীকৃত জাসদ সমাজতন্ত্রী ছিল। কিন্তু নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান কিংবা বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা কোনভাবে সমাজতন্ত্রী ছিল?
যুদ্ধত্তোর দেশে শেখ মুজিবর রহমানের জনপ্রিয়তা এবং ব্যক্তিত্বকে চ্যালেন্জ ছুঁড়ে দিয়ে জাসদের সৃষ্টি হয়েছিল। মুজিব বিরোধিতাই ছিল তৎকালীন জাসদ রাজনীতির পাথেয়। এর সাথে একদিকে যুক্ত হয়েছিল শেখ মুজিবর কর্তৃক প্রত্যাখ্যিত হওয়ার বঞ্চনার ক্ষোভ। (১১) অপর দিকে ছিল সমাজতন্ত্রের সম্মোহনী শক্তির শ্লোগান। শেখ মুজিবের শাসনামল ছিল সর্বগ্রাসী স্বপ্ন ভঙ্গের। এই স্বপ্ন ভঙ্গকে বিক্ষোভে পরিণত করেছিল প্রশাসনিক অরাজকতা ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। স্বপ্নভঙ্গ সাধারন মানুষের সামনে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে শক্তভাবেই সমাজে জায়গা করে নিয়েছিল জাসদ। যদিও শেখ মুজিব বিরোধীতা ব্যতিত কার্যকর বিকল্প কোনো রাজনৈতিক কর্মসুচী হাজির করতে পারেনি জাসদ । বিপ্লবী সৈনিক সংস্থাও জাসদের মুজিব বিরোধীতার স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়েছিল। যদিও বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার শুরুতেই কোন দিক নির্দেশনা বা পরিকল্পনা ছিল না। মুজিব হত্যার পর জাসদের রাজনৈতিক আবেদন ক্রমশঃ কমে আসছিল। জাসদের সামনে রাজনৈতিক বিরোধিতার তেমন কোনো লক্ষ্যবস্তু না থাকায় জাসদের রাজনৈতিক উপযোগিতা ও গ্রহণযোগ্যতা কমে আসে।
তথ্য সূত্র :
(১) সৈনিকের হাতে কলম – নায়েব সুবেদার মাহবুবর রহমান। প্রকাশক : সংলাপ, জার্মানী । পৃষ্ঠা ১১০-১১১।
(২) পূর্বোক্ত -পৃষ্ঠা ১১৪
(৩) পূর্বোক্ত -পৃষ্ঠা ১১৪
(৪) পূর্বোক্ত – পৃষ্ঠা ১১৫
৫) পূর্বোক্ত – পৃষ্ঠা ১১৫
(৬) পৃষ্ঠা ২০৭
(৭) পূর্বোক্ত -২৩২
(৮) পূর্বোক্ত ১৫
(৯) পূর্বোক্ত ১৫-১৬
(১০) পূর্বোক্ত ৪৫
(১১) ১৯৭২ সালের ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সম্মেলন হয়েছিল ঢাকায়। দুই পক্ষই শেখ মুজিবর রহমানকে প্রধান অতিথি করেছিল। শেখ মুজিবর রহমান এক পক্ষের সম্মেলনে গিয়েছিলেন। শেখ মুজিবর রহমান যে গ্ৰুপের সম্মেলনে যান নাই সেই পক্ষই পরবর্তীতে জাসদ গঠন করে।