শীর্ষ খবর:
চলমান সংবাদ

মশক নিধনে গবেষণালব্ধ পদ্ধতিতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের গবেষণালব্ধ পদ্ধতিতে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাসব্যাপী বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম। প্রতিদিন ৪টি করে মোট ৪১টি ওয়ার্ডে ১০ দিন মশার ওষুধ ছিটানোর পর আবার পুন:কার্যক্রম পরিচালিত হবে। অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে একমাসে তিনবার ওষুধ ছিটানো হবে। এর বাইরে নিয়মিত কার্যক্রমও চলবে। এভাবে মাসব্যাপী কার্যক্রমে ১০০জন জনবল সম্পৃক্ত থাকবে। একই সাথে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতা মূলক প্রচার কার্যক্রম চলবে।

মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য অত্যাধুনিক মেশিন সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কার্যক্রমের সাথে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ১হাজার ৫শত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ২৫জন স্প্রেম্যান ওষুধ ছিটাবেন। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) চসিকের সম্মেলন কক্ষে মশক নিধনে ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) গবেষকদলের প্রতিবেদন হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এসব কথা বলেন। মেয়র বলেন, মশক নিধনে ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা নিরুপন ও প্রয়োগ পদ্ধতির ভিন্নতা নির্ধারণে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের গবেষণা একটি নতুন ইতিবাচক মাত্রা যুক্ত করেছে। এ নিয়ে গবেষণারর জন্য চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে অনুরোধ জানালে তিনি তাতে সাড়া দিয়ে গুরুত্বের সাথে গবেষণা কর্ম সম্পাদনে সচেষ্ট ছিলেন এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে কীটতত্ত্ব বিভাগের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকগণ যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তা সত্যিই নগরবাসীর জন্য বড় প্রাপ্তি। মশক নিধনে এ ধরণের বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনই এই প্রথমবারের মত পেয়ে সারাদেশে মশক নিধনে দিক নির্দেশনামূলক উপায় অন্বেষণের পথ দেখিয়েছে। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরিণ আখতার বলেন, মশক নিধনে চসিকের কার্যক্রমকে অর্থবহ ও ফলপ্রসু করতে গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন তৈরির জন্য চবিকে দেয়া দায়িত্বটি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের এবং গর্বেরও। আমরা চেষ্টা করেছি, একটি কার্যকর ও ফলপ্রসু প্রস্তাবনা ও সুপারিশ সমৃদ্ধ গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে। তিনি জানান, প্রতিবেদন তৈরিতে বিশেষজ্ঞ টিম ৯৯টি এলাকা পরিদর্শন করেন। এর মধ্যে ৫৭ টি স্পট থেকে লার্ভা সংগ্রহ করা হয়। এ সংগৃহীত লার্ভার মধ্যে ১৫টি স্পটে লার্ভার শতভাগই ছিলো এডিস, এনাপলিস ছিলো ৩৯টিতে। প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়, ফগার মেশিনের চেয়ে স্প্রে-মেশিনে ওষুধ ছিটানো হলে তার কার্যকারিতা ফলপ্রসূ হবে। তবে ফগার মেশিনে ছিটানো ওষুধের ভিন্নতা আনলে এর কার্যকারিতা পূর্ণতা পাবে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাকৃতিকভাবে মশা প্রজনন প্রতিরোধ সম্ভব। এক ধরণের মাছ লার্ভা খেয়ে বিনাশ করে। এছাড়া উদ্ভিদেও পুদিনা পাতা, লেবু পাতা, তুলসী পাতা, নিমপাতার, তেজপাতার ঘ্রাণ মশা প্রজনন প্রতিরোধ করে। চবি উপাচার্য সুপারিশ করেন, সিটি কর্পোরেশনের যে সকল আইল্যান্ড আছে- সেখানে এ ধরণের উদ্ভিদের চারা রোপন করা হলে মশা নিধন অনেকটা সহজ সাধ্য হবে। চসিক’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে প্রতিবেদন উপস্থাপন সভায় বক্তব্য রাখেন চবি উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, চসিক প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি মো. মোবারক আলী, শৈবাল দাশ সুমন, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, চবি গবেষণা টিমের আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক রবিউল হাসান, ড. মো. ওমর ফারুক, ড. তাপসী বোস, ড. এইচ.এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ। চবি গবেষণা টিমের আহবায়ক অধ্যঅপক রবিউল হাসান প্রতিবেদনটি প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন করেন।

# ০৩.০৮.২০২১ চট্টগ্রাম #